Fact Check: পুরনো ভিডিওকে অসমে অবস্থিত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বলে ভাইরাল করা হচ্ছে

বিশ্বাস নিউজ নিজে তদন্ত করে জানতে পেরেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটা 2018 সালের। পুরনো এই ভিডিওটাকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির সঙ্গে যুক্ত করে ভুয়ো দাবি সহ ভাইরাল করা হচ্ছে।

নয়াদিল্লী (বিশ্বাস নিউজ)। বাংলাদেশে বর্তমানে হিংসাত্মক ঘটনা চলতে থাকার মধ্যেই একটা ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে, সেটাকে শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে এটা হল অসমে অবস্থিত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত জড়ো হওয়া মানুষের সাম্প্রতিক ঘটনার ভিডিও।  

বিশ্বাস নিউজ নিজে তদন্ত চালিয়ে জানতে পেরেছে যে, এই ভি়ডিও 2018 সাল থেকে ইন্টারনেটে আছে। পুরনো এই ভিডিওকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অবস্থার সঙ্গে যুক্ত করে ভুয়ো দাবি সহ ভাইরাল করা হচ্ছে।

ভাইরাল পোস্টে কী আছে?

ফেসবুক ইউজার ভাইরাল পোস্ট শেয়ার করে লিখেছেন, “বাংলাদেশে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর বাংলাদেশ ও অসম বর্ডারে জড়ো হওয়া মানুষের লাইভ দৃশ্য।”

পোস্ট-এর আর্কাইভ ভার্সন এখানে দেখুন।

তদন্ত

আমরা তদন্ত শুরু করে সবার প্রথমেই গুগল লেন্সের মাধ্যমে ভাইরাল ভিডিওর কি-ফ্রেমস সার্চ করেছিলাম। সার্চ করতে-করতে আমরা দেখলাম যে, এই ভিডিওটা 5 জুন, 2018 থেকে ইউটিউব-এ আপলোড হয়ে আছে। সেখানে উল্লিখিত তথ্য অনুযায়ী, এটা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে আয়োজিত মিলন মেলার ভিডিও। 

এই তথ্যের ভিত্তিতে আমরা নিজেদের তদন্তকে আরও এগিয়ে নিয়ে গেলাম আর তখন আমরা বাংলাদেশের ইউটিউব চ্যানেলে এই মিলন মেলা সম্পর্কিত একটা ভিডিও পেলাম। সেখানে উল্লিখিত তথ্য অনুযায়ী, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে মিলন মেলার জন্য হাজার-হাজার মানুষের সমাগম হয়েছে।

ভাইরাল ভিডিও সম্পর্কে সার্চ করতে-করতে আমরা অসম পুলিসের এক্স হ্যান্ডল ও ফেসবুক পেজ-এ এই ভিডিও সম্পর্কিত একটা পোস্ট দেখতে পেয়েছিলাম। সেখানে ভিডিওর স্ক্রিন শট শেয়ার করে বলা হয়েছে যে, এটা 2018-র এপ্রিলের ভিডিও।  

মিলন মেলা সম্পর্কে সার্চ করতে-করতে আমরা ইটিভি ভারত-এর ওয়েবসাইটে 2023-এর এপ্রিলে প্রকাশিত একটা আর্টিকল দেখতে পেলাম। সেখানে উল্লিখিত তথ্য অনুযায়ী, মিলন মেলা বা এই বার্ষিক মেলা চৈত্র সংক্রান্তির দিন হয়। সেদিন ভারত ও বাংলাদেশের মানুষ একে অপরকে উপহার দেওয়ার জন্য সমবেত হয়ে থাকেন। এ বছর এই মেলার আয়োজন করা হবে না। এবার এই মেলা আয়োজিত হলে টানা চারবার এই মেলা আয়োজিত হত। গত বছর বিধানসভা নির্বাচনের জন্য এই মেলা রদ করা হয়েছিল এবং তার আগেও কোভিড অতিমারির জন্য দু’বছর এই মেলার আয়োজন করা হয়নি। এ বছর এই আশঙ্কায় এই মেলা রদ করা হয়েছে যে, এই মেলা আয়োজন করার সময় ব্যাপক ভিড় জমে গেলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিগড়ে যেতে পারে। 

অমর উজালা-তে 2019-এর জুলাই মাসে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের যেখানে এই মেলার আয়োজন করা হয়, সেখানে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া আছে। এই মিলন মেলা নির্দিষ্ট দিনে হয়। যেদিন চৈত্র সংক্রান্ত হয়, সেই দিনই এই মিলন মেলা হয়। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-এর সঙ্গে মিলে বিএসএফ এই মিলন মেলা সেই সব মানুষের জন্য শুরু করেছিল, যাঁরা খুবই সাধারণ শ্রেণির মানুষ। অর্থাৎ, যাঁদের কাছে ভিসা বা পাসপোর্ট বানিয়ে নেওয়ার মতন পর্যাপ্ত টাকা-পয়সা নেই। উভয় দেশের মানুষ বছরে একবার বর্ডারে এসে হাজির হন এবং নিজেদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করেন। চার-পাঁচ মিটার দূরে দাঁড়িয়েই পরস্পরের খবরাখবর জিজ্ঞাসা করে নেন।  

রিপোর্ট-এ প্রকাশ, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নির্দিষ্ট কয়েকটি চিহ্নিত স্থানে এই মিলন মেলার আয়োজন করা হয়। যেমন, পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের গদরোক, শুখানি ও ভোলাপাড়া ইত্যাদি। এই মেলার সময় ভারতীয় লোকেরা বাংলাদেশে বসবাস করা নিজেদের আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করেন এবং এই মেলায় এত মানুষের ভিড় হয় যে, তা সামাল দিতে বিএসএফ-কে ব্যাপক পরিশ্রম করতে হয়। 

বিশ্বাস নিউজ এই কথা নিশ্চিত ভাবে বলছে না যে, ভাইরাল ভিডিওটা কোন জায়গার। তবে এ কথা স্পষ্ট যে, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এবং তার পর ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলির সঙ্গে এই ভিডিওর কোনও সম্পর্ক নেই। 

ভাইরাল ভিডিও সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমরা আমাদের সহযোগী সুমিতা জয়সওয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তিনি পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক জাগরণ-এর সিনিয়র সাংবাদিক। তিনি আমাদের জানিয়েছেন যে, পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে মিলন মেলা হয়। সেখানে লোকেরা সীমান্তের ওপারে থাকা নিজেদের আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিত জনের সঙ্গে দেখা করেন দূরে দাঁড়িয়ে।  

ভুয়ো পোস্ট যে-ফেসবুক ইউজার শেয়ার করেছেন তাঁর সোশ্যাল স্ক্যানিং করার পর আমরা জানতে পারলাম যে, তাঁকে আড়াই হাজারের বেশি মানুষ ফলো করেন।

निष्कर्ष: বিশ্বাস নিউজ নিজে তদন্ত করে জানতে পেরেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটা 2018 সালের। পুরনো এই ভিডিওটাকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির সঙ্গে যুক্ত করে ভুয়ো দাবি সহ ভাইরাল করা হচ্ছে।

False
Symbols that define nature of fake news
Know The Truth...

Knowing the truth is your right. If you have a doubt on any news that could impact you, society or the nation, let us know. You can share your doubts and send you news for fact verification on our mail ID contact@vishvasnews.com or whatsapp us on 9205270923

Related Posts
রিসেন্ট পোস্ট