বিশ্বাস নিউজ তার তদন্তে এটি ভুল বলে মনে করেছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি বাংলাদেশের বিক্ষোভের, যাতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মীদের টার্গেট করা হয়। বাংলাদেশে হিন্দু ছাত্রদের ওপর হামলার সাম্প্রদায়িক দাবি করে এই সংঘর্ষের ভিডিও শেয়ার করা হচ্ছে।
নিউ দিল্লী (বিশ্বাস নিউজ)। বাংলাদেশে কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভের পর সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে যেখানে দাবি করা হয়েছে যে এই বিক্ষোভ চলাকালীন জামাত এ ইসলামী হোস্টেলে বসবাসকারী হিন্দু শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে এবং তাদের মারধর করে।
বিশ্বাস নিউজ তার তদন্তে এটি ভুল বলে মনে করেছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি বাংলাদেশের বিক্ষোভের, যাতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মীদের টার্গেট করা হয়। বাংলাদেশে হিন্দু ছাত্রদের ওপর হামলার সাম্প্রদায়িক দাবি করে এই সংঘর্ষের ভিডিও শেয়ার করা হচ্ছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ইউজার ‘Satveer Singh Rawat’ ভাইরাল ভিডিও (আর্কাইভ লিঙ্ক ) শেয়ার করার সময় লিখেছেন, “# বাংলাদেশে #জিহাদিরা হিন্দু ছাত্রদের উপর হামলা করেছে,,, জীবন বাঁচাতে, হিন্দু ছাত্ররা হোস্টেল ক্যাম্পাসের পেছন থেকে দৌড়ে যায় এবং নিচে নামার চেষ্টা করার সময় পড়ে গিয়ে আহত হয়।”
বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে আরও অনেক ইiউজার অভিন্ন দাবি সহ এই ভিডিওটি শেয়ার করেছেন।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে ছাত্রদের বহুতল ভবনের ছাদ ও জানালা থেকে ঝুলতে দেখা যায় এবং কয়েকজন ছাত্রকে তাদের ধাক্কা দিতে দেখা যায়।
ভাইরাল ভিডিওটির কি ফ্রেমের রিভার্স ইমেজ সার্চ করে, আমরা ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অফিসিয়াল’-এর ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা আসল ভিডিওটি পেয়েছি।
আমরা গুগল ট্রান্সলেটের সাহায্যে বাংলা ক্যাপশনটি অনুবাদ করেছি যেখানে লেখা আছে, “যারা এভাবে মানুষকে হত্যা করতে পারে, তারা কি সাধারণ ছাত্র?”
এর ভিত্তিতে আমরা নিউজ সার্চের সাহায্য নিয়েছি এবং সার্চে আমরা অনেক বাংলাদেশি নিউজ পোর্টালের রিপোর্ট পেয়েছি, যেখানে এই ঘটনার তথ্য রয়েছে। “চট্টগ্রামে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় একটি ছয়তলা ভবন থেকে ছুড়ে ফেলার অভিযোগে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ১৫ জন কর্মীর অবস্থা গুরুতর,” ঢাকা ট্রিবিউন ডটকম এই রিপোর্ট করেছে।
পুলিশ ও দলীয় নেতাদের তরফ থেকে বলা হয়েছে, “আহত 15 শিক্ষার্থীর মধ্যে ছয়জন আইসিইউতে রয়েছেন এবং তারা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।”
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, যা পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ নামে পরিচিত, বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন, যার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। এটি বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্টুডেন্ট উইঙ্গ।
উল্লেখ্য, কোটা পদ্ধতি নিয়ে বাংলাদেশে সহিংস বিক্ষোভ হয়েছে, যাতে শতাধিক মানুষ মারা যায়। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্ট অনুসারে, বাংলাদেশে কোটা ব্যবস্থা চালু হয়েছিল 1972 সালে, যার অধীনে সরকারি চাকরি ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে 30 শতাংশ আসন মুক্তিযোদ্ধা এবং পরবর্তীতে তাদের সন্তান ও নাতি-নাতনিদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। পরবর্তীকালে, মহিলাদের জন্য 10 শতাংশ আসন সংরক্ষিত হয়েছিল এবং অনগ্রসর জেলা থেকে আগত প্রার্থীদের জন্য অতিরিক্ত 10 শতাংশ সংরক্ষণ করা হয়েছিল। এছাড়াও, উপজাতীয় সম্প্রদায়ের সদস্যদের জন্য 5 শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য 1 শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। এইভাবে, সামগ্রিকভাবে দেশে 56 শতাংশ সংরক্ষণ রয়েছে। এটি একটি বিতর্কের বিষয় হয়ে ওঠে, কারণ অনেকে মনে করেছিলেন যে আসনের এত বড় সংরক্ষিত অংশ মেধাকে উপেক্ষা করে। শিক্ষার্থীরা এ ব্যবস্থার পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন।
নিউজ রিপোর্ট অনুসারে, বাংলাদেশে কোটা পদ্ধতি নিয়ে সহিংস বিক্ষোভের মধ্যে 100 এর বেশি ভারতীয় শিক্ষার্থী নিরাপদে দেশে ফিরেছে।
ভাইরাল ভিডিওটির বিষয়ে আমরা বাংলাদেশের ফ্যাক্ট চেকার তৌসিফ আকবরের সাথে যোগাযোগ করেছি। তিনি নিশ্চিত করেছেন, এ ঘটনায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মীদের টার্গেট করা হয়েছে। এটা ছিল ছাত্রলীগ ও বিরোধী দলগুলোর ছাত্রদলের মধ্যেকার বিষয়।
ভাইরাল পোস্ট শেয়ার ইউজার কে ফেসবুকে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ অনুসরণ করে। অন্যান্য ভাইরাল দাবি এবং সম্প্রতি সমাপ্ত নির্বাচন সম্পর্কিত ভাইরাল দাবিগুলির ফ্যাক্ট চেক রিপোর্ট বিশ্বাস নিউজের ওয়েবসাইট পড়া যেতে পারে।
উপসংহার: বাংলাদেশে কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভের সময় ছাত্রলীগ (বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন) এবং বিরোধী দলগুলির ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষের ভিডিওটি ফেক এবং সাম্প্রদায়িক দাবীর সাথে শেয়ার করা হয়েছে
Knowing the truth is your right. If you have a doubt on any news that could impact you, society or the nation, let us know. You can share your doubts and send you news for fact verification on our mail ID contact@vishvasnews.com or whatsapp us on 9205270923