উপসংহার: বাংলাদেশের মীরপুরে আধিপত্য বিস্তারের ঘটনায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার ঘটনাকে ত্রিপুরার হত্যাকাণ্ড বলে সাম্প্রদায়ির রং মাখিয়ে ভাইরাল করা হচ্ছে।
নতুন দিল্লি (বিশ্বাস নিউজ) : দশেরার সময় বাংলাদেশে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক হিংসার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্রমাগত পুরোনো ও অপ্রাসঙ্গিক ভিডিওগুলোকে মিথ্যা ও উস্কানিমূলক দাবি সহ প্রচার করা হচ্ছে। এমনই একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তিকে জনতা আক্রমণ করছে। দাবি করা হচ্ছে যে, ত্রিপুরায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা এক মুসলমান ব্যক্তিকে হত্যা করেছে।
বিশ্বাস নিউজের তদন্তে এই দাবি মিথ্যা এবং সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বলে প্রমাণিত হয়েছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি বাংলাদেশের একটি ঘটনার, যেখানে কিছু লোক পারস্পরিক শত্রুতার জেরে শাহীন উদ্দীন নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছে। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের ভিডিওকে সাম্প্রদায়িক রং দিয়ে ত্রিপুরার নামে ভাইরাল করা হচ্ছে।
ভাইরাল ভিডিওতে কী আছে?
ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে, সোশ্যাল মিডিয়া ইউজার ‘ড. মোহম্মদ শাকীর খান (30কে)’, লিখেছেন, “ত্রিপুরায় হিন্দুত্ববাদী জনতা মুসলমানদের উপর সন্ত্রাস তৈরি করছে। গত দুই দিনে আধ ডজনেরও বেশি মসজিদে আক্রমণ হয়েছে!
“মুসলমানদের উপর হামলা থামছে না, প্রতিটি গলি লোকালয়ে মুসলমানদের মারা কাটা হচ্ছে!
দেখুন কত নির্মমভাবে বেচারাকে কেটে ফেলা হয়েছে!”
অনুসন্ধান
সংবাদ অনুসন্ধানে আমরা ত্রিপুরায় এমন কোনো ঘটনার খবর পাইনি। আমাদের অনুসন্ধানে আমরা অবশ্য এমন অনেক প্রতিবেদন পেয়েছি, যেখানে ত্রিপুরায় সাম্প্রদায়িক হিংসার উল্লেখ রয়েছে। ত্রিপুরা পুলিশের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেলের তথ্য অনুযায়ী, পানীসাগরের মসজিদে কোনো অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেনি। এই ভিডিওর মাধ্যমে পুলিশ জনগণকে ফেসবুক ও টুইটারে কোনো ধরনের গুজব না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।
এর পরে ভিডিওটির আসল উৎস খুঁজতে, ইনভিড থেকে পাওয়া কী-ফ্রেমগুলির রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধানে, আমরা এই ভিডিওটি বাংলাদেশী নিউজ চ্যানেল ‘যমুনা টিভি’–তে আপলোড করা একটি বুলেটিন পেয়েছি যেখানে ভাইরাল ভিডিওটি দেখা যাচ্ছে।
প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, নিহতের নাম শাহীন উদ্দীন, তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের পল্লবীতে। অনুসন্ধানে অন্য একটি ইউ টিউব চ্যানেলে ঘটনার একটি ভিডিও পাওয়া গেছে, যেখানে এটি বাংলাদেশের বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
সংবাদ অনুসন্ধানে আমরা বাংলাদেশের সংবাদপত্র দ্য ডেইলি স্টারের পোর্টালে 16 মে 2021-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন পেয়েছি, যেখানে এই ঘটনার উল্লেখ রয়েছে।
প্রতিবেদনে দেওয়া তথ্য ভিডিও বুলেটিনে করা দাবিকে সমর্থন করে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আধিপত্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে ঢাকা মীরপুর এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি মিলে একজন ব্যক্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেছে।পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ওয়াজেদ আলী, দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, নিহত ব্যক্তিকে শাহীন উদ্দীন(40) নামে শনাক্ত করা হয়েছে।’
এখন পর্যন্ত করা আমাদের তদন্তে এটা পরিস্কার যে, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি বাংলাদেশের মীরপুর এলাকার একটি ঘটনার, যেখানে আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে কয়েকজন ব্যক্তি মিলে এক ব্যক্তিকে(শাহীন উদ্দীন)ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেছিল।
এই ভিডিওটির বিষয়ে আমরা ত্রিপুরার স্থানীয় টাইম 8-এর প্রধান সংবাদদাতা অভিজিৎ নাথের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তিনি বলেছেন, ‘এই ভিডিওটি ত্রিপুরার কোনো ঘটনার নয়, রাজ্যে এমন কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়নি।’
ভাইরাল ভিডিওটি ভুল দাবির সঙ্গে শেয়ার করা ইউজারের প্রোফাইলকে টুইটারে প্রায় 29 হাজার মানুষ অনুসরণ করেন।
निष्कर्ष: উপসংহার: বাংলাদেশের মীরপুরে আধিপত্য বিস্তারের ঘটনায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার ঘটনাকে ত্রিপুরার হত্যাকাণ্ড বলে সাম্প্রদায়ির রং মাখিয়ে ভাইরাল করা হচ্ছে।
Knowing the truth is your right. If you have a doubt on any news that could impact you, society or the nation, let us know. You can share your doubts and send you news for fact verification on our mail ID contact@vishvasnews.com or whatsapp us on 9205270923