আমাদের তদন্তে এটি পরিস্কার যে ভাইরাল ভিডিওতে করা দাবিটি মিথ্যা। কলকাতা হাইকোর্ট মমতা সরকারকে রাজ্যে সংঘটিত হিংসাত্মক ঘটনা সম্পর্কে একটি হলফনামা দাখিল করার জন্য বলেছিল, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করেনি।
(বিশ্ব নিউজ)। বাংলায় নির্বাচনের পরবর্তী হিংসাত্মক ঘটনার মাঝে একটি নিউজ বুলেটিনের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে। এই ভিডিওতে ব্রেকিং নিউজের মাধ্যমে দাবি করা হয়েছে যে এই হিংসাত্মক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করেছেন। ভিডিওটিতে ভয়েসওভারে এমনও বলতে শোনা যায় যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি দল বাংলায় পৌঁছেছে এবং তদন্তের পরে বাংলায় রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করা হবে। বিশ্বাস নিউজের তদন্তে পাওয়া গেছে যে ভাইরাল ভিডিওতে করা দাবিগুলি মিথ্যা ছিল।
আসলে, কলকাতা হাইকোর্ট পশ্চিমবঙ্গে আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত একটি হলফনামা দাখিল করতে সরকারকে বলেছিল, তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পদত্যাগ করতে বলা হয়নি।
ভাইরাল পোস্ট কি আছে?
ফেসবুক ইউজার বিবেক শর্মা এই ভিডিওটি শেয়ার করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে: হাইকোর্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ চেয়েছেন। হাইকোর্ট বলেছিল যে রাজ্য সরকার আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা না নিলে মুখ্যমন্ত্রীর অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দল পশ্চিমবঙ্গে পৌঁছেছে। কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে একটি রিপোর্ট চেয়েছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের চার সদস্যের একটি টিম রাজ্যপালের সাথে সাক্ষাত করেন। হিংসাত্মক ঘটনার সাথে কে জড়িত, তার তদন্ত করা হবে এবং তারপরে রাজ্যে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করা হবে।
পোস্টটির আর্কাইভ ভার্সান এখানে দেখা যাবে।
তদন্ত
বিশ্বাস নিউজ প্রথমে ইন্টারনেটে কীওয়ার্ডগুলির সাহায্যে ভাইরাল ভিডিওটির সার্চ করেছিল, তবে আমরা এমন কোনও মিডিয়া রিপোর্ট পাইনি যাতে কলকাতা হাইকোর্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পদত্যাগের করতে বলেছিল। যদি এটি ঘটে থাকত তবে অবশ্যই এই সংবাদটি মিডিয়ায় হেডলাইন হতো।
আমরা কিছু মিডিয়া রিপোর্ট পেয়েছি যাতে কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ মমতা সরকারকে তিন দিনের মধ্যে বাংলায় হিংসাত্মক ঘটনা নিয়ে একটি রিপোর্ট জমা দিতে বলেছিল। তবে এই মিডিয়া রিপোর্টে লেখা নেই যে কলকাতা হাইকোর্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগও চেয়েছিল।
আমরা বাংলায় দৈনিক জাগরণের ব্যুরো চিফ জে কে বাজপেয়ীর সাথে যোগাযোগ করেছি। তিনি আমাদের বলেছিলেন যে হাইকোর্ট সরকারকে হিংসাত্মক ঘটনাগুলিতে হলফনামা দেওয়ার জন্য বলেছিল, সরকার হলফনামাও দিয়েছে, তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পদত্যাগ করতে বলার কথা ঠিক নয়। আমরা বাংলায় টিএমসি নেতা সৌগত রায়ের সাথেও যোগাযোগ করেছি। তিনি আমাদের বলেছিলেন যে ভাইরাল ভিডিওতে করা দাবিটি সত্য নয়। কলকাতা হাইকোর্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পদত্যাগ চাননি।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতির শাসন আরোপ করার কথাও বলা হয়েছে। তৃতীয়বারের মতো মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার আগে রাজ্যপাল জগদীপ ধানখার তার অভিনন্দনমূলক বক্তব্যে হিংসতায় লাগাম লাগানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। এর সাথে সম্পর্কিত মিডিয়া রিপোর্ট এখানে পড়তে পারেন।
একই সঙ্গে, ইন্ডিয়া কালেক্টিভ নামের একটি বে-সরকারী সংস্থা এবং সিনিয়র অ্যাডভোকেট গৌরব ভাটিয়া রাষ্ট্রপতি শাসন আরোপের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে দুটি পৃথক পিটিশন দায়ের করেছিলেন। তবে এই মুহূর্তে বলা মুশকিল যে বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হবে কি না।
ভিডিওটিতে করা দাবিটি সঠিক যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চার সদস্যের টিম রাজ্যপালের সাথে দেখা করে বাংলার হিংসার বিষয়ে রিপোর্ট চেয়েছে। আমরা ইনভিড টুলের সাহায্যে স্ক্রিনগ্র্যাব নিয়ে গুগল রিভার্স সার্চের সাহায্যে ভাইরাল ভিডিওটির সার্চও করেছি। আমরা ইউটিউব চ্যানেল “CSK News” এ ভাইরাল ভিডিওটি পেয়েছি, যা এই চ্যানেলে 7 ই মে আপলোড করা হয়েছিল। চ্যানেলটি 29শে জুন 2019 এ চালু হয়েছিল।
এখন সময় হল ফেসবুকে পোস্টটি শেয়ার করা ইউজার বিবেক শর্মার প্রোফাইল স্ক্যান করার। প্রোফাইল স্ক্যান করার সময় আমরা দেখতে পাই যে ব্যবহারকারী নিজেকে বিজেপি-র স্যোশাল ওয়ার্কার বলে অভিহিত করেন, আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ অ্যাক্টিভ।
निष्कर्ष: আমাদের তদন্তে এটি পরিস্কার যে ভাইরাল ভিডিওতে করা দাবিটি মিথ্যা। কলকাতা হাইকোর্ট মমতা সরকারকে রাজ্যে সংঘটিত হিংসাত্মক ঘটনা সম্পর্কে একটি হলফনামা দাখিল করার জন্য বলেছিল, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করেনি।
Knowing the truth is your right. If you have a doubt on any news that could impact you, society or the nation, let us know. You can share your doubts and send you news for fact verification on our mail ID contact@vishvasnews.com or whatsapp us on 9205270923