তামিলনাড়ুর ভেদারানিয়ামে 2019–এ দুই জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের সময় আম্বেদকারের মূর্তি ধ্বংস করার ঘটনার ভিডিওটিকে সাম্প্রদায়িক রং দিয়ে কেরলের নামে ভাইরাল করা হচ্ছে।
নতুন দিল্লি (বিশ্বাস নিউজ)। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও-তে, কিছু লোককে, আম্বেদকারের মূর্তি ধ্বংস করতে দেখা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে যে, কেরলের মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকেরা প্রত্যক্ষ দিবালোকে, ড. ভীমরাও আম্বেদকারের মুর্তি ধ্বংস করেছে।
বিশ্বাস নিউজের অনুসন্ধানে এই তথ্য ভুল প্রমাণিত হয়েছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি তামিলনাড়ুর ভেদারানিয়াম এলাকায় ঘটে যাওয়া একটি পুরোনো ঘটনার ভিডিও, যাকে সাম্প্রদায়িক রং দিয়ে কেরলের নামে ভাইরাল করা হচ্ছে।
ভাইরাল পোস্টে কী আছে?
ফেসবুক ইউজার ‘এনডি সঙ্গম’ এই ভাইরাল ভিডিওটি (আর্কাইভ লিঙ্ক) শেয়ার করে লিখেছেন যে, ”কেরালে মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকেরা প্রত্যক্ষ দিবালোকে তলোয়ার নিয়ে ড. ভীমরাও আম্বেদকারের মুর্তি ভেঙেছে…জয় ভীম এবং জয় ভীমের স্লোগান দেওয়া সেই ব্যক্তিরা এখন কোথায় এবং তারা মুখে কুলুপ এঁটেছে কেন?”
সোশ্যাল মিডিয়ার অন্যান্য বহু ইউজার এই ভিডিওটিকে একই এবং মিল থাকা দাবির সঙ্গে, শেয়ার করেছেন।
অনুসন্ধান
ইনবিল্ড টুলের সাহায্যে, ভিডিওটির কি-ফ্রেম বের করে, গুগল রিভার্স ইমেজ খোঁজা হয়েছে। এই খোঁজ প্রক্রিয়ায় আমরা বহু পুরোনো নিউজ রিপোর্টের লিঙ্ক পেয়েছি, যেখানে এই ঘটনার বিবরণ রয়েছে। TV9 Telugu Live-এর অধীনস্থ ইউ-টিউব চ্যানেল-এ 26 আগস্ট 2019-এ আপলোড করা ভিডিও বুলেটিন অনুযায়ী, তামিলনাড়ুর ভেদারানিয়াম-এ আম্বেদকারের মূর্তি ধ্বংস করা হয়েছিল।
বুলেটিন-এ দেখতে পাওয়া ভিডিওটি সেটি, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুল দাবির সঙ্গে ভাইরাল করা হচ্ছে।
এর পর আমরা সম্পর্কিত কি-ওয়ার্ড দিয়ে নিউজ সার্চ-এর সাহায্য নিয়েছি। এই অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় আমরা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর ওয়েবসাইটে 26 আগস্ট 2019 –এ প্রকাশিত রিপোর্ট পেয়েছি, যেটাতে তামিলনাড়ুর ভেদারানিয়াম-এ আম্বেদকারের মূর্তি ধ্বংস করার অভিযোগে পুলিশের 28 জনকে আটক করার বিবরণ রয়েছে।
রিপোর্টের বিবরণ অনুযায়ী, তামিলনাড়ুর নাগাপট্টিনম জেলার ভেদারানিয়াম-এ দুই জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের পর আম্বেদকারের মূর্তি ধ্বংস করা হয়। রিপোর্টে কোথাও আম্বেদকারের মূর্তি ধ্বংসের পেছনে মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষের জড়িত থাকার কথা পাওয়া যায়নি।
এক্সপ্রেসের রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘স্থানীয় প্রভাবশালী পান্ডিয়ান জাতিগোষ্ঠীর এক ব্যক্তির গাড়ি, ভেদারানিয়াম বাস স্ট্যান্ড-এর কাছে, দলিত জাতিগোষ্ঠীর, রামচন্দ্রন নামের এক ব্যক্তিকে ধাক্কা মারে। ঘটনার পর অভিযুক্ত ব্যক্তি সেখান থেকে পালিয়ে যায়, কিন্তু জমা হওয়া লোকজন, ওই গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। আনুমানিক আধঘণ্টা পর পান্ডিয়ান-এর সমর্থকেরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং আম্বেদকারের মূর্তি ধ্বংস করে।’
ঘটনার উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়ে, পুলিশ ঘটনায় জড়িত সকলকে আটক করে এবং পুরোনো মূর্তির স্থানে নতুন ব্রোঞ্জ মূর্তি স্থাপন করে।
ভাইরাল হতে থাকা ভিডিওটি নিয়ে আমরা, নিউজ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর নাগাপট্টিনম-এর রিপোর্টার অ্যান্টনি ফার্নান্ডোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তিনি বলেছেন যে, ‘এটা আনুমানিক দুবছর আগের ঘটনা এবং এটা কোনো হিন্দু-মুসলমান বিবাদ নয়, বরং দুই হিন্দু সম্প্রদায়ের জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে হওয়া বিবাদের জেরে একটি জাতিগোষ্ঠীর কিছু মানুষ আম্বেদকারের মূর্তি ধ্বংস করেছিল।’
ভুল দাবির সঙ্গে উপস্থাপিত এই ভিডিওটি যিনি শেয়ার করেছেন, সেই ইউজার-কে ফেসবুক-এ আনুমানিক সাত হাজার মানুষ অনুসরণ করেন।
निष्कर्ष: তামিলনাড়ুর ভেদারানিয়ামে 2019–এ দুই জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের সময় আম্বেদকারের মূর্তি ধ্বংস করার ঘটনার ভিডিওটিকে সাম্প্রদায়িক রং দিয়ে কেরলের নামে ভাইরাল করা হচ্ছে।
Knowing the truth is your right. If you have a doubt on any news that could impact you, society or the nation, let us know. You can share your doubts and send you news for fact verification on our mail ID contact@vishvasnews.com or whatsapp us on 9205270923